November 13, 2025, 3:52 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একই দিনে অবরোধ/সাড়ে চার ঘণ্টা পর স্বাভাবিক যান চলাচল ঢাকা–খুলনা মহাসড়কে রাজবাড়ীতে থেমে থাকা বাসে কুষ্টিয়াগামী এসবি পরিবহনের ধাক্কা, আহত ১৫ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ১৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুটি দুর্নীতির মামলা সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও সাড়ে তিন মাস বাড়লো আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল হলে পুনরায় চালু হবে ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃদেশীয় ট্রেন ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’: পদ্মার চরে চার জেলায় ১,৫০০ পুলিশ সদস্যের বিশেষ অভিযান পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের কুষ্টিয়ায় আবারও ডিসি পরিবর্তন/ ইকবাল হোসেন আসছেন নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে

হিলি ও বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি শুরু : বাজারে স্বস্তির আভাস

দৈনিক কুষ্টিয়া ানলাইন/
দিনাজপুরের হিলি ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ব্যাপক হারে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। সরকারের অনুমোদনের পর এ চাল আসতে শুরু করায় দেশের বাজারে চাপ কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
১২ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে শুধু হিলি স্থলবন্দর দিয়েই ৩৩২টি ট্রাকে ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল এসেছে। অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতে বেনাপোল দিয়ে ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়।
এ চালের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণা, সাম্পা কাতারি, রতœা ও মিনিকেটসহ বিভিন্ন জাত।
আমদানির পর হিলি বন্দরে পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে। তবে বেনাপোলে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত বড় পরিমাণে চাল আসতে থাকলে দাম আরও কমতে পারে।
হিলি কাস্টমস স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান, প্রথম কয়েকদিন আমদানিতে পুরনো ৬২.৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর থাকলেও পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন ২ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে। ফলে এখন চাল সহজে আমদানি করা যাচ্ছে।
বেনাপোল প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ বলেন, চালের নমুনা পরীক্ষা করে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে, যাতে বাজারে সরবরাহে বিলম্ব না হয়।
বেনাপোল স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত বেনাপোল দিয়ে আসা চালের পরিমাণ খুবই কম। তাই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে বৃহৎ পরিসরে চাল এলে দাম কমতে শুরু করবে।
হিলি বন্দরের আমদানিকারক ললিত কেশরা বলেন, “এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন বড় আকারে চাল আমদানি হচ্ছে এবং ক্রমেই পরিমাণ বাড়ছে। এর ফলে কেজি প্রতি ২–৩ টাকা কমেছে। সরকারের এ উদ্যোগ বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”
বাজার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হিলি বন্দরে ভালো মানের চাল কেজি প্রতি ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের চেয়ে ৩ টাকা কম। আটাশ প্রজাতি ৫৪–৫৫ টাকা এবং স্বর্ণা ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
কুষ্টিয়া পৌর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সোনা বিশ্বাস বলেন, “যদি খাজানাগরের মিনিকেট চাল কম দামে পাওয়া যায়, তবে আমরা ভারত থেকে আমদানি না করে এখান থেকেই কিনব।”
উত্তরের কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, কয়েকদিন আগেও তারা বেশি দামে চাল কিনছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ একই চাল কেজি প্রতি ২–৩ টাকা কম দামে পাওয়া গেছে। প্রতিদিন বড় আকারে চাল আসায় সরবরাহও বাড়ছে। তাদের আশা, সামনে দাম আরও কমবে।
হিলি প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার আমদানিকৃত চালের মানও ভালো।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে—বাজারে দামের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ব্যবসায়ীদের মতে, আমদানির প্রক্রিয়া আরও সহজ হলে এবং সরবরাহ বাড়লে বাজারে স্বাভাবিকভাবেই দাম কমে আসবে, তখন ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।
বর্তমানে পাইকারি বাজারে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৭৫-৮০ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫-৬৮ টাকা, স্বর্ণা মোটা ৫৬-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮০-৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৫-১০০ টাকা এবং চিনিগুঁড়া চাল ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল ৭৮-৮৫ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫-৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯০ টাকা, স্বর্ণা মোটা ৫৫-৬০ টাকা, পাইজাম ৬২-৬৫ টাকা, বাসমতী ৯৫-১২০ টাকা এবং চিনিগুঁড়া ১৩০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার চলতি বছরের শুরুতে আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ কারণে আমদানিকৃত চাল তুলনামূলক কম দামে পাওয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন মাথাপিছু চাল গ্রহণের পরিমাণ ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম। শহরাঞ্চলে এ পরিমাণ ২৮৪ দশমিক ৭ গ্রাম। ১৭ কোটি মানুষের দৈনিক চাহিদা হিসাব করলে বছরে প্রয়োজন হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টন চাল। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে উৎপাদন হয়েছে ৪ কোটি টনেরও বেশি চাল।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Comments are closed.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net